রূপচর্চায় মধুর ব্যবহার
৪০০০ বছর আগে থেকে স্বর্ণময় উজ্জ্বল মধুকে রূপচর্চায় ব্যাপকহারে ব্যবহৃত হতো। ত্বকের যেকোন সমস্যায় মধু হচ্ছে এন্টিবায়োটিক।
বর্তমান সময়েও কিন্তু কম নয়। আধুনিক বিজ্ঞানের আশীর্বাদে রূপচর্চার আনুষঙ্গিক সবকিছুতে মধুর ব্যবহার হচ্ছে। যেমনঃ ফেস ক্রীম, ফেস ওয়াশ, শ্যাম্পু, বডি লোশন, বডি ওয়েল সহ ইত্যাদি আরও প্রসাধনীতে।
তবে মধু আসলে ঠিক কি কি কাজ করে ত্বকের জন্য। চলুন তবে দেখে নেয়া যাক।
সৌন্দর্য ও রূপচর্চায় মধুর ৯ টি ব্যাবহার
১. ত্বককে ময়েশ্চারাইজার করে গভীর থেকে
মধুতে থাকা এনজাইম ত্বককে গভীর থেকে ময়েশ্চারাইজার করে। তাছাড়া ত্বকে কন্ডিশনিং এবং কোমল করে তোলে মধু।
যাদের শুষ্ক ত্বকে ১ চামচ রো- হানি নিয়ে ১০ থেকে ১৫ মিনিট রেখে উষ্ণ গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। ব্যস হয়ে গেল শুষ্ক ত্বকের মধুর তৈরি ফেস মাকর্স।
২. লোমকূপ পরিষ্কারক হিসেবে মধু
ব্যস্ত জীবন আর দূষিত পরিবেশের প্রভাব বর্তমানে আমাদের চেহারায় পড়ছে। যার ফলশ্রুতি স্বরূপ আমাদের চেহারা লোমকূপ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ময়লায় আর মৃত কোষ গুলো জমা হচ্ছে প্রতিদিন।
মধুতে থাকা এন্টিঅক্সিডেন্ট আপনার এই লোমকূপ গুলো পরিষ্কার করে এবং আপনার ত্বককে অক্সিজেন গ্রহন করতে সাহায্য করে। এতে আপনার ত্বক সহজেই প্রাণ খুলে নিঃশ্বাস নিতে পারবে।
৩. ব্রণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ
মধুতে রয়েছে এন্টিব্যাকটেরিয়াল ও এন্টি ফ্যালামেটরি প্রোপার্টিজ যা আপনার ত্বককে অতিরিক্ত তেলে শুষে নিয়ে ত্বকে গভীর থেকে পরিস্কার করে। সাধারণত ত্বক সংক্রমিত হলে আমরা ব্রণের সমস্যায় পড়ি। মধু ত্বককে এই সকল সমস্যা থেকে দূরে রাখে।
৪. ত্বকের বলিরেখা দূর করতে মধু
মধুতে রয়েছে এন্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের বলিরেখা পড়ার হাত থেকে রক্ষা করে সাথে ফাইন লাইন্স দূর করে। নিয়মিত মধুর ফেস প্যাক ব্যবহারে ত্বকের এই সমস্যা গুলো দূর করে।
৫. ত্বকের প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে মধু
নিয়মিত দুধের বা দইয়ের সাথে ফেস প্যাক ব্যবহার প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে। সপ্তাহে দুই বার ব্যাবহারে আশানুরূপ ফল পাওয়া যায়।
৬. ত্বকের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে
অস্বাস্থ্যকর জীবন যাপন আর প্রতিদিনের স্ট্রেস এ আমরা যেন বয়সের আগে মুটিয়ে পড়ছি।
মধুতে থাকা সকল উপাদান আপনার ত্বককে হাইড্রেড করে এবং সেল গুলো পানির ভারসাম্য বজায় রাখে।
৭. চুলের কন্ডিশনার হিসেবে মধু
ত্বকের মতো চুলের জন্য পারফেক্ট কন্ডিশনার মধু। সাধারণত চুলের ময়েশ্চারাইজার ঘাটতি দেখা দিলে তখন চুলের স্বাস্থ্য ভেঙ্গে পড়ে ফলে হেয়ার ফল, চুল পাতলা হয়ে যায়, অকালে চুল পেকে যাওয়া, মাঝখান থেকে চুল ভেঙে পড়া সহ চুলের অন্যান্য সমস্যা দেখা দেয়।
মধুর হেয়ার প্যাক কিন্তু এসকল সমস্যার মুক্তি দিবে। বিখ্যাত হেয়ার আর্টিস “ ফিলিক্স ফিসচার বলেছেন মধু চুলকে করে তোলে সফট, ঝরঝরে ও বাউন্সি”।
তার জন্য আপনাকে বেশি কিছু করতে হবে না। শুধু প্রাকৃতিক গুন সম্পন্ন মধুর সাথে আপনাকে পরিষ্কার এক কাপের আধা কাপ পানির সাথে এক টেবিল চা-চামচ মিশিয়ে নিন। গোসলের আধ ঘন্টা আগে মাইল্ড কোন শ্যাম্পু দিয়ে চুল পরিষ্কার করে ফেলুন।
৮. খুশকি দূর করতে মধু
সাধারণত আমাদের মাথার ত্বক সংক্রমিত হলে আমরা খুশির সমস্যায় পড়ে যায়। ফলে চুল পড়া সহ মাথার ত্বক চুলকানি অসহ্য যন্ত্রণার আমাদের পড়তে হয়।
মধু যেহেতু এন্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খুশির সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।
তার জন্য আপনাকে ২ টেবিল চামচ পরিমান মধু নিতে হবে এবং মাথার তালুতে ঘষে ঘষে লাগাতে হবে। এভাবে ২০ মিনিট রেখে পরে চুল শ্যাম্পু করে ফেলুন। সপ্তাহে ২ থেকে ৩ বার মধু ব্যবহারে ফলে চুল হবে খুশকি মুক্র এবং ঝরঝরে।
৯. লিপ বাম হিসেবে মধু
আমাদের শরীরে সবচেয়ে কোমল ত্বকের অংশটি হচ্ছে ঠোঁটের। শীতকালে খুব সহজেই ঠোঁট পানি শূন্য হয়ে পড়ে আর হয়ে উঠে শুষ্ক।
গরমেই কিছুটা কম হলেও ঠোঁটের যত্ন আমাদের সারা বছর নিতে হয়।
মধুতে থাকা,এনজাইম, এন্টিঅক্সিডেন্ট এবং মিনারেলস আপনার ঠোঁটকে দারুন ভাবে ময়েশ্চারাইজার করে। শুধু কিছুটা পরিমাণ রো-হানি নিয়ে সরাসরি ঠোটে ম্যাসেজ করুন ৫ থেকে ৭ মিনিট। পরে পানি দিয়ে পরিস্কার করে নিন।
তাছাড়া ত্বকের যেকোন পুড়ে যাওয়া অংশে আপনি মধু ব্যবহার করতে পারেন।
আশা করি বুঝতে পারছেন মধুর শুধু রং এর জন্য নয় বরং তার গুনের জন্য মানুষ হাজার হাজার বছর ধরে মধু ব্যবহার করে আসছে।
মধুর ব্যবহারিতা নিয়ে এতো এখন অনেক কথা হল। তবে প্রশ্নটি হচ্ছে খাটি মধু পাবো কোথায়?
আপনাদের সুস্বাস্থ্যের বন্ধু মাই অর্গানিক বিডি পাশে আছে সব সময় আপনাদের সেবায়। মাই অর্গানিক এর কাছে পাবেন বিভিন্ন ধরনের মধু।