নাগেশ্বরের পরিচিতি ও ভেষজ গুণাবলি :
নাগেশ্বর মাঝারি আকারের চিরসবুজ বৃক্ষ। পাতা সরল, প্রতিমুখ, সরু লম্বাটে ও সাদা আভাযুক্ত চকচকে। এ গাছে অসংখ্য ফুল হয়। এই ফুলের কলিকে নাগকেশর বলা হয়। ফুলের বর্ণ সাদা। স্বাদে সুমিষ্ট ও সুঘ্রাণ বিশিষ্ট।
প্রচলিত নামঃ নাগেশ্বর, নাগকেশর
ইউনানী নামঃ নারমুশ্ক
আয়ুর্বেদিক নামঃ নাগকেশর, নাগীসর
ইংরেজি নামঃ Iron Wood Tree
বৈজ্ঞানিক নামঃ Mesua nagassarium (Burm.) Kost (M.ferra Linn.)
পরিবারঃ Clusiaceae
প্রাপ্তিস্থানঃ
চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম ও সিলেটের বনাঞ্চলে পাওয়া যায়। দেশের অন্যত্রও লাগানো অবস্থায় দেখা যায়।
রোপনের সময় ও পদ্ধতিঃ
অক্টোবর-নভেম্বর মাসে পরিপক্ক ফল সংগ্রহ করে তা রৌদ্রে শুকিয়ে বীজ হিসাবে ব্যবহার করা হয়। বীজ অনেকদিন পর্যন্ত সংরক্ষন করা যায়। ফেব্রুয়ারি-মার্চ বীজ বপনের উপযুক্ত সময়। অঙ্কুরোদগম হতে ৩-৪ সপ্তাহ সময় লাগে। বীজ তলায় মাটি ও গোবরের মিশ্রন হতে হবে ১:৪ অনুপাতে। চারার দূরত্ব ৪ থেকে ৫ মিটার হওয়া প্রয়োজন। এক হতে দুই বৎসর বয়সের চারা রোপণের জন্য বেশী উপযুক্ত।
রাসায়নিক উপাদানঃ
ফুলে উদ্বায়ী তেল, তিক্ত উপাদান, বিটা-এমাইরিন, বিটা-সাইটোস্টেরল; বিচিতে অনুদ্বায়ী তেল এবং ফলে একটি তেল রজন বিদ্যমান।
ব্যবহার্য অংশঃ ফুল।
গুনাগুনঃ
আনন্দদায়ক, হৃদযন্ত্রের শক্তিবর্ধক, যৌন উদ্দীপক, যকৃত ও পাকস্থলীর শক্তিবর্ধক, বলকারক ও রক্ত পরিষ্কারক। অর্শ, কৃমি, চুলকানিতে উপকারী।
বিশেষ কার্যকারিতাঃ আনন্দদায়ক, যৌন উদ্দীপক, যকৃত ও পাকস্থলীর শক্তিবর্ধক।
রোগ অনুযায়ী ব্যবহার পদ্ধতিঃ
রোগেরনামঃ যকৃত ও পাকস্থলীর
ব্যবহার্য অংশঃ ফুল (চূর্ণ)
মাত্রাঃ ৩ গ্রাম
ব্যবহার পদ্ধতিঃ আহারের পর দিনে ২ বার সামান্য পরিমাণ জৈন চূর্ণ মিশিয়ে পানিসহ সেব্য।
রোগেরনামঃ অর্শরোগে
ব্যবহার্য অংশঃ ফুল (কাঁচা)
মাত্রাঃ ৯-১০ গ্রাম
ব্যবহার পদ্ধতিঃ রাতে গরম পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে কচলিয়ে ছেঁকে নিয়ে পানিটুকু সামান্য মিছরি বা মধুসহ সেব্য।
সতর্কতাঃ
নির্দিষ্ট মাত্রার অধিক মাত্রায় সেবন করা সমীচীন নয়। এতে শরীরের জ্বালা পোড়া হতে পারে।