সর্পগন্ধার পরিচিতি ও বিভিন্ন ভেষজ গুণাবলি :
গাছ সাধারনতঃ ১ মিটার পর্যন্ত উঁচু হয়। পাতা সরল, সাধারনতঃ প্রতিটি গিটে তিনটি করে থাকে। পুষ্পদন্ডে অল্প অল্প গুচ্ছবন্ধ গোলাপী ফুল হয়। ফলে প্রথমে সবুজ, পরে পাকলে বেগুনী কালো হয়। বীজগুলো প্রায় ক্ষেত্রে জোড়া হয়। মূলগুলো দেখতে মোটা, প্রায় ৩-৪ সে.মি. ব্যাসযুক্ত ও ভঙ্গুর। মূলের রস ধুসর পীতবর্ণের। কাঁচা মূলের গন্ধ কাঁচা তেঁতুলের মত।
প্রচলিত নামঃ সর্পগন্ধা, ছোটচাঁদ
ইউনানী নামঃ উস্রোল
আয়ুর্বেদিক নামঃ সর্পগন্ধা
ইংরেজি নামঃ Snake Root
বৈজ্ঞানিক নামঃ Rauvolfia serpentina (Linn.) Benth.
পরিবারঃ Apocynaceae
প্রাপ্তিস্থানঃ
বাংলাদেশের প্রায় সব জেলাতেই পাওয়া যায়। তবে, একসঙ্গে কোথাও অধিক সংখ্যায় দেখা যায় না। অতি মাত্রায় আহরনের ফলে বর্তমানে এটি প্রায় বিলুপ্তির পথে।
রোপনের সময় ও পদ্ধতিঃ বীজ হতে এর বংশ বিস্তার করা হয়। আগষ্ট হতে অক্টোবর পর্যন্ত বীজ সংগ্রহ করা যায়। বীজ সংগ্রহের পরে দুই-তিন দিন রোদে শুকিয়ে এক হতে পাঁচ মাস পর্যন্ত সংরক্ষন করা যায়। বীজ বপনের পূর্বে ২৪ ঘন্টা পানিতে ভিজিয়ে নিতে হয়। মাটি, গোবর ও ভিজা ভূষি ২:১:১ অনুপাতে মিশিয়ে বীজতলা তৈরি করতে হয়। রসযুক্ত মাটিতে এর চাষ ভাল হয়। মূল ও ডালার কাটিং লাগিয়েও এর চাষ করা যায়।
রাসায়নিক উপাদানঃ
মূলে রিসার্পিন, ডিসার্পিডিন ও রেসিনামিন নামক তিনটি ঔষধি অ্যালকালয়েড ও বহু সংখ্যক অন্যান্য অ্যালকালয়েদ, স্টেরল, তেল, রজন ও ওলিক এসিড বিদ্যমান।
ব্যবহার্য অংশঃ মূল ।
গুনাগুনঃ
উত্তেজনা নাশক ও শান্তকারক। উচ্চরক্তচাপ, অনিদ্রা, উন্মাদ ও হিস্টিরিয়া রোগে উপকারী।
বিশেষ কার্যকারিতাঃ অনিদ্রা ও উচ্চরক্তচাপ।
রোগ অনুযায়ী ব্যবহার পদ্ধতিঃ
রোগেরনামঃ অনিদ্রা ও উচ্চরক্তচাপে
ব্যবহার্য অংশঃ মূলচুর্ণ
মাত্রাঃ ১০০-২০০ মিলি.
ব্যবহার পদ্ধতিঃ প্রত্যহ ১-২ বার পানিসহ সেব্য।
রোগেরনামঃ উন্মাদ ও হিস্টিরিয়ায়
ব্যবহার্য অংশঃ মূল
মাত্রাঃ ২০০-২৫০ মি.গ্রাম
ব্যবহার পদ্ধতিঃ দিনে ১ বার, প্রয়োজনে দুইবার দুধ ও চিনিসহ সেব্য।
সতর্কতাঃ
নির্দিষ্ট মাত্রার অধিক সেবন করা সমীচী নয়। এই ঔষধ ব্যবহারের সময় গোলমরিচ চূর্ণ মিশিয়ে সেবন করা উত্তম।