সজিনার পরিচিতি ও ভেষজ গুণাবলি :
সজিনার পরিচিতি ও ভেষজ গুণাবলিতে পরিপূর্ন। সজিনা মাঝারি ধরনের বৃক্ষ। সাধারনতঃ গাছ ৯-১০মিটার উঁচু হয়ে থাকে। এ গাছের ডাল-পালা খুব নরম প্রকৃতির হয়। পাতা ত্রিপক্ষল যৌগিক। ফুল সাদা ও লাল দু’ধরনের হয়ে থাকে। ফল ৩০-৪০ সে.মি. লম্বা হয়ে থাকে। ফলের ভিতরে ত্রিকোণাকৃতি বীজ থাকে। সাধারনতঃ বছরে ২-৩ বার ফুল ও ফল হয়। ফল তরকারীতে ব্যবহৃত হয়।
প্রচলিত নামঃ শজিনা, শজনে, সাজনা
ইউনানী নামঃ সাহাঞ্জনা
আয়ুর্বেদিক নামঃ শোভাঞ্জন
ইংরেজি নামঃ Horse Radish Tree, Drumstick
বৈজ্ঞানিক নামঃ Moringa oleifera Lamk.
পরিবারঃ Moringaceae
প্রাপ্তিস্থানঃ
বাংলাদেশের প্রায় সর্বত্রই, বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলে বসত বাড়ীর আশ-পাশে লাগানো হয়।
রোপনের সময় ও পদ্ধতিঃ
বীজ ও কান্ডের কাটা অংশ (কাটিং) দিয়ে বংশ বিস্তার সম্ভব। কাটিং সাধারনতঃ মাটি ও গোবর ৩:১ অনুপাতে মিশিয়ে তৈরি বীজতলায় একটু কাত করে লাগানো হয়। শুষ্ক মৌসুমে পানি দিতে হয়। শিকড় গজালে শিকড়সহ কাটিং সরাসরি মাঠে লাগানো যায় অথবা মাঠে লাগানোর পূর্বে পলিথিন ব্যাগেও চারা করে ৪-৫ মাস পরে বর্ষা মৌসুমে লাগানো যায়।
রাসায়নিক উপাদানঃ
মূলের ছাল অ্যালকালয়েড, পাতায় প্রোটিন, ভিটামিন ও খনির দ্রব্য বিদ্যমান। বিচি অনুদ্বায়ী তেলসমৃদ্ধ।
ব্যবহার্য অংশঃ মূল, ছাল, পাতা, ফল, বীজ ও আঠা।
গুনাগুনঃ
ব্যথানিবারক, হজমকারক, ক্ষুধাবর্ধক, বায়ুনিঃসারক, মূত্রকারক। সন্ধিব্যথা, কোমর ব্যথা, গিটেবাত, প্লীহার বৃদ্ধিতে উপকারী।
বিশেষ কার্যকারিতাঃ হজমকারক, ব্যথা নিবারক ও মূত্রকারক।
রোগ অনুযায়ী ব্যবহার পদ্ধতিঃ
রোগেরনামঃ হজমশক্তি বৃদ্ধি ও বায়ু নিঃসরণে
ব্যবহার্য অংশঃ ফল
মাত্রাঃ প্রয়োজনমত
ব্যবহার পদ্ধতিঃ তরকারী রান্না করে খেতে হবে।
রোগেরনামঃ বাত ব্যথা ও স্নায়ু শুলে
ব্যবহার্য অংশঃ ছালের রস
মাত্রাঃ প্রয়োজনমত
ব্যবহার পদ্ধতিঃ রসের সাথে প্রয়োজনমত রসুন পিষে আক্রান্ত স্থানে প্রলেপ আকারে ব্যবহার করতে হবে।
রোগেরনামঃ মূত্র কৃচ্ছতায় ও প্লীহা বৃদ্ধিতে
ব্যবহার্য অংশঃ মূলের রস
মাত্রাঃ ১০-১৫ মিলি.
ব্যবহার পদ্ধতিঃ প্রত্যহ ২ বার দুধসহ সেব্য।
তা্ই সজিনার ভেষজ গুণাবলি ও উপকারীতা অপরিসীম।
সতর্কতাঃ
নির্দিষ্ট মাত্রার অধিক ব্যবহার করা সমীচীন নয়।