মৌরির পরিচিতি ও ভেষজ গুণাবলি:
মৌরি সুগন্ধদায়ক বর্ষজীবী উদ্ভিদ, ভেষজ গুণাবলিতে ভরপুর।এ গাছ যা ১ থেকে ২ মিটার উঁচু হয়। পাতা বহুপক্ষল যৌগিক। ফুল ছোট ও হলুদ বর্ণের। ফল আয়তাকার, উপবৃত্তাকার কিংবা নলাকার হয় যা সোজাসুজি কিংবা হলুদাভ বাদামী বর্ণের হয়। ফলের উপরিভাগ টুপীর ন্যায় ক্ষুদ্র আবরণ থাকে।
প্রচলিত নামঃ মৌরি, ছব, পান মুহুরী, গুড়ামুসুরী ও মিঠা জিরা
ইউনানী নামঃ বাদিয়ান
আয়ুর্বেদিক নামঃ মৌরি
ইংরেজি নামঃ Fennel
বৈজ্ঞানিক নামঃ Foeniculum vulgare Mill.
পরিবারঃ Apiaceae
প্রাপ্তিস্থানঃ
বাংলাদেশের সর্বত্র চাষ করা হয়।
রোপনের সময় ও পদ্ধতিঃ সাধারনত সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত জমিতে বীজ (ফল) বোনা হয়। বসন্তে ফল পরিপক্ক হয়।
রাসায়নিক উপাদানঃ
ফলে প্রচুর পরিমাণ উদ্বায়ী ও অনুদ্বায়ী তেল বিদ্যমান।
ব্যবহার্য অংশঃ মূল, ফল বা বীজ, পাতা ও বীজের তেল।
গুনাগুনঃ
বায়ু নিঃসারক, দৃষ্টিশক্তি বর্ধক, কোষ্ঠ পরিষ্কারক। সুগন্ধকারক, পাকস্থলীর শক্তিবর্ধক, যকৃত, প্লীহা ও মূত্রাশয়ের প্রতিবন্ধকতা দূরকারক, ঋতু প্রবাহক, মূত্রকারক ও দাহ নিবারক। মৌরির তেল মাথাব্যথা, সন্ধিব্যথা ও বাতব্যথায় উপকারী।
বিশেষ কার্যকারিতাঃ বায়ু নিঃসারক, দৃষ্টিশক্তি বর্ধক, কোষ্ঠ পরিষ্কারক।
রোগ অনুযায়ী ব্যবহার পদ্ধতিঃ
রোগেরনামঃ বায়ু নিঃসারক হিসাবে
ব্যবহার্য অংশঃ ফল বা বীজ চূর্ণ
মাত্রাঃ ৪-৫ গ্রাম
ব্যবহার পদ্ধতিঃ আহারের পর দিনে ২ বার পানিসহ সেব্য।
রোগের নামঃ রজোঃনিঃসারক বা ঋতু প্রবাহক হিসাবে
ব্যবহার্য অংশঃ ফল বা বীজ চূর্ণ
মাত্রাঃ ৫-৭ গ্রাম
ব্যবহার পদ্ধতিঃ
সকালে খালি পেটে ও রাত্রে আহারের পূর্বে কুসুম গরম পানিসহ সেব্য।
রোগেরনামঃ যকৃত, প্লীহা, বক্ষস্থল ও মূত্রাশয়ের প্রতিবন্ধকতায়
ব্যবহার্য অংশঃ ফল বা বীজ চূর্ণ
মাত্রাঃ ৫-৭ গ্রাম
ব্যবহার পদ্ধতিঃ আহারের পর দিনে ২ বার ঠান্ডা পানিসহ সেব্য।
রোগেরনামঃ মাথা ব্যথা, সন্ধিব্যথা, বাত ব্যথায়
ব্যবহার্য অংশঃ তেল
মাত্রাঃ প্রয়োজনমত
ব্যবহার পদ্ধতিঃ আক্রান্ত স্থানে দৈনিক ৩-৪ বার প্রয়োগ করতে হবে।
সতর্কতাঃ
মাত্রাধিক মৌরি সেবন উষ্ণ প্রকৃতির লোকের জন্য ক্ষতিকর।
আমাদের এ লেখাটি ভালো লাগলে আরো পড়তে পারেন :
অনন্তমূলের পরিচিতি ও ভেষজ গুণাবলি