মেহেদীর পরিচিতি ও ভেষজ গুণাবলি:
এটি গুল্ম বা ছোট বৃক্ষ বিশেষ। মেহেদীর ভেষজ গুণাবলি অনেক।এর পাতা সরল, প্রতিমুখ, বৃন্তক, ২.৫-৫.৫ সে.মি. লম্বা, ১-২ সে.মি. প্রশস্ত। পাতায় বিশেষ গন্ধ থাকে। হাত, পা, নখ, চুল-দাড়ি রাঙানোর জন্য ব্যবহৃত হয়। বিশেষতঃ বিয়ে বা গায়ে হলুদের সময় কনের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে মেহেদীর বিকল্প নেই।
প্রচলিত নামঃ মেহেদী, মেন্দী
ইউনানী নামঃ হেনা
আয়ুর্বেদিক নামঃ মদয়ন্তিকা
ইংরেজি নামঃ Samphire, Henna
বৈজ্ঞানিক নামঃ Lawsonia inermis Linn. (L. alba Linn.)
পরিবারঃ Lythraceae
প্রাপ্তিস্থানঃ
বাংলাদেশের সর্বত্র বাড়ির আঙ্গিনায় চাষ করা হয়।
রোপনের সময় ও পদ্ধতিঃ
ডাল ভেঙ্গে লাগালেই নতুন গাছ হিসাবে স্থায়ী হয়ে যাবে। এভাবে কাটিং দিয়ে এর বংশ বিস্তার করা হয়। অপেক্ষাকৃত শক্ত কান্ডকে কাটিং হিসেবে ব্যবহার করা উত্তম। বৎসরের যে কোন সময় কাটিং লাগানো যায়। তবে বর্ষাকালে কাটিং করে বীজতলায় লাগালে ভাল। কাটিং একটু কাত করে লাগাতে হবে। মূল সমেত কাটিং সরাসরি মাঠে লাগানো যায় অথবা মাটি ও গোবর ৩:১ অনুপাতে ভর্তি পলিথিনের ব্যাগে কিছু দিন রেখে তারপর লাগানো যায়।
রাসায়নিক উপাদানঃ
পাতা ও ছালে অণুজীবধ্বংসী রঙ্গিন ন্যাফথোকুইনোনদ্রব্য, প্রচুর পরিমাণ ট্যানিন, কিছু গ্লাইকোসাইড, স্টেরল ও টার্পিন বিদ্যমান।
ব্যবহার্য অংশঃ পাতা, ছাল, বীজ ও ফুল।
গুনাগুনঃ পঁচনবিরোধী এবং চর্মরোগ, চুল উঠা, চুল পাকারোধে কার্যকরী। শুক্রমেহ, চর্মরোগ, চুলের খুকশী, স্বেতপ্রদর, নখকুনী ও হাত-পায়ের হাজায়, মুখ ও গলক্ষতে উপকারী।
বিশেষ কার্যকারিতাঃ পচনবিরোধী, চর্মরোগ, চুল উঠা ও চুল পাকারোধে কার্যকরী।
রোগ অনুযায়ী ব্যবহার পদ্ধতিঃ
রোগেরনামঃ শুক্রমেহ রোগে
ব্যবহার্য অংশঃ পাতার রস
মাত্রাঃ ২ চা চামচ
ব্যবহার পদ্ধতিঃ রসের সাথে চিনি মিশিয়ে দিনে ২ বার সেব্য।
রোগেরনামঃ শ্বেতপ্রদরে
ব্যবহার্য অংশঃ পাতার রস
মাত্রাঃ ২ চা চামচ
ব্যবহার পদ্ধতিঃ রসের সাথে চিনি মিশিয়ে দিনে ২ বার সেব্য।
রোগেরনামঃ চুল উঠা, পাকা ও খুসকিতে
ব্যবহার্য অংশঃ পাতার রস
মাত্রাঃ পরিমাণমত
ব্যবহার পদ্ধতিঃ ১-২ গ্রাম হরিতকী চূর্ণ রসের সাথে মিশিয়ে চুলের গোড়ায় লাগাতে হবে।
রোগেরনামঃ চর্মরোগ
ব্যবহার্য অংশঃ পাতার রস
মাত্রাঃ পরিমাণমত
ব্যবহার পদ্ধতিঃ দিনে ২ বার প্রলেপ দিতে হবে।
রোগেরনামঃ মুখ ও গলক্ষতে
ব্যবহার্য অংশঃ পাতা
মাত্রাঃ ৫-৭ গ্রাম
ব্যবহার পদ্ধতিঃ জ্বাল দিয়ে গড়গড়া করতে হবে প্রত্যহ ৩-৪ বার।
সতর্কতাঃ
এ যাবৎ কোন বিরূপ প্রতিক্রিয়া পরিলক্ষিত হয়নি।