গুলঞ্চের-পরিচিতি-ও-ভেষজ-গুনাবলী:
গুলঞ্চ একটি দীর্ঘ লতানো উদ্ভিদ। সাধারনতঃ অন্য গাছকে অবলম্বন করে বেড়ে ওঠে। পরিনত বয়সে লতাগুলো আঙুলের ন্যায় মোটা হয়। লতার গায়ের ছালগুলা কাগজের মত পাতলা। নিচে সবুজ এবং ভিতরে সাদা। স্বাদ তিক্ত ও পিচ্ছিল। পাতা সরল, একান্তর, অনেকটা পান আকৃতির, শীতকালে পাতা পড়ে, বসন্তে আবার নতুন পাতা বের হয়। ছোট হরিদ্রাভ সাদা ফুল ও মটরের মত বীজ হয়। ফল পাকলে লাল বর্ণের দেখায়।
প্রচলিত নামঃ গুলঞ্চ, গুভুচী, পদ্মগুলঞ্চ
ইউনানী নামঃ গেলূ
আয়ুর্বেদিক নামঃ গুডুচা, গুলঞ্চ
ইংরেজি নামঃ Moon Creeper/Bile Killer.
বৈজ্ঞানিক নামঃ Tinospora cordifolia (Willd.) Hook. f.
পরিবারঃ Menispermaceae
প্রাপ্তিস্থানঃ দক্ষিণাঞ্চল ব্যতীত বাংলাদেশের প্রায় সর্বত্র পাওয়া যায়।
রোপনের সময় ও পদ্ধতিঃ বীজ থেকে বর্ষার শেষে চারা গজায়। চারা লাগিয়ে চাষ করা যায়। আবার ডাল থেকেও নতুন গাছ জন্মানো যায়। মে-জুন মাসে ডালার কাটিং লাগাতে হয়।
রাসায়নিক উপাদানঃ লতায় একটি অ্যালকালয়েড, কিছু গ্লাইকোসাইড, স্টেরল ও বিভিন্ন তিক্ত রাসায়নিক দ্রব্য বিদ্যমান।
ব্যবহার্য অংশঃ পাতা ও লতা।
গুনাগুনঃ সকল প্রকার চর্মরোগ, পুরাতন বা জীর্ণ জ্বর, অরুচি, বাতের যন্ত্রনা, রক্তঅর্শ, ডায়াবেটিস, অগ্নিমান্দ্য, জন্ডিস, সোরিয়াসিস ও কৃমিতে উপকারী।
বিশেষ কার্যকারিতাঃ সকল প্রকার চর্মরোগ।
রোগ অনুযায়ী ব্যবহার পদ্ধতিঃ
রোগেরনামঃ সকল প্রকার চর্মরোগ
ব্যবহার্য অংশঃ কান্ড (কাঁচা)
মাত্রাঃ ৮-১০ গ্রাম
ব্যবহার পদ্ধতিঃ থেতো করে ১ কাপ পানিতে ভিজিয়ে রেখে পরবর্তীতে কচলিয়ে ছেঁকে নিয়ে পানিটুকু সেব্য, প্রত্যহ ২-৩ বার।
রোগেরনামঃ পুরাতন বা জীর্ণ জ্বরে
ব্যবহার্য অংশঃ পাতা/কান্ড (কাঁচা)
মাত্রাঃ ১০-২০ গ্রাম
ব্যবহার পদ্ধতিঃ থেতো করে ১ কাপ গরম পানিতে ৩/৪ ঘন্টা ভিজিয়ে রেখে পরবর্তীতে কচলিয়ে ছেঁকে নিয়ে পানিটুকু সেব্য, প্রত্যহ ২-৩ বার।
রোগেরনামঃ কৃমি বিনাশে
ব্যবহার্য অংশঃ কান্ডের রস
মাত্রাঃ ১০-১৫ মিলি (২-৩ চা চামচ)
ব্যবহার পদ্ধতিঃ প্রত্যহ ২-৩ বার চিনিসহ সেব্য। (৫-৭ দিন)
সতর্কতাঃ তাজা গুলঞ্চ ব্যবহার করা উত্তম। মাত্রার অধিক সেবন করা সমীচীন নয়।
আমাদের এ লেখাটি ভালো লাগলে আরো পড়তে পারেন :