কুড়চির পরিচিতি ও ভেষজ গুণাবলি:

কুড়চি মাঝারি উচ্চতার বৃক্ষ। সাধারনতঃ গাছ ৬-৮ মিটার পর্যন্ত উঁচু হয়ে থাকে। পাতা সরল, ১৫-২০ সেমি লম্বা ও ৫-৮ সেমি পর্যন্ত চওড়া হয়। বোঁটা থেকে পাতা ছিড়লে সাদা কষ বের হয়। বসন্ত কালে সাদা রঙের ফুল হয়। বর্ষায় ফল হয়, ফল দেখতে বরবটির মত, লম্বায় প্রায় ২০-২৫ সেমি। বীজগুলো সারি করে সাজানো থাকে। কুড়চির বীজকে ইন্দ্রযব বলা হয়। শীতকালে যখন ফল থাকে তখন বীজ শুকালে বাদামী বর্ণের হয়। বীজ স্বাদে অত্যন্ত তিতা।

প্রচলিত নামঃ কুড়চি, কুটজ, কুরচি, ইন্দ্রযব

ইউনানী নামঃ ইন্দরজৌ তল্‌খ

আয়ুর্বেদিক নামঃ কুটজ

ইংরেজি নামঃ Tellicherry, Kurchi

বৈজ্ঞানিক নামঃ Holarrhena pubescence (Buch-Ham.) Wall. ex DC. (H. antidysenterica Heyne ex. Roth.)

পরিবারঃ Apocynaceae

প্রাপ্তিস্থানঃ বাংলাদেশের উত্তর পশ্চিম এবং চট্টগ্রাম অঞ্চলের বনে এটি প্রচুর জন্মে।

কুড়চির পরিচিতি ও ভেষজ গুণাবলি

কুড়চির পরিচিতি ও ভেষজ গুণাবলি

 

রোপনের সময় ও পদ্ধতিঃ বর্ষার মৌসুমে চারা লাগাতে হয়। বীজ থেকে চারা করা যেতে পারে। আবার শিকড় থেকে গজানো চারাও লাগানো যেতে পারে।

রাসায়নিক উপাদানঃ ছালে প্রচুর সংখ্যক স্টেরয়ডীয় অ্যালকালয়েড এবং ট্যানিন, গদ-রঞ্জন, লুপিয়ল ও বিটা-সাইটোস্টেরল বিদ্যমান।

ব্যবহার্য অংশঃ ছাল, বীজ।

গুনাগুনঃ অতিসার বা ডায়ারিয়া, আমাশয় ও মুখগহ্বরের ক্ষত, বিভিন্ন প্রকার কৃমি, অন্ত্রনালীর দুর্বলতা ও কুষ্ঠ রোগে উপকারী।

বিশেষ কার্যকারিতাঃ অতিসার বা ডায়ারিয়া, আমাশয় ও মুখগহ্বরের ক্ষত।

রোগ অনুযায়ী ব্যবহার পদ্ধতিঃ

রোগেরনামঃ অতিসার বা ডায়ারিয়ায়
ব্যবহার্য অংশঃ ছাল
মাত্রাঃ ৫-১০ গ্রাম
ব্যবহার পদ্ধতিঃ ২ কাপ পানিতে জ্বাল করে আধা কাপ হলে নামিয়ে ছেঁকে নিয়ে প্রত্যহ ২-৩ বার সেব্য।

রোগেরনামঃ রক্ত আমাশয়ে
ব্যবহার্য অংশঃ ছাল
মাত্রাঃ ১০-২০ গ্রাম
ব্যবহার পদ্ধতিঃ আধাচূর্ণ করে ৩/৪ কাপ পানিতে জ্বাল করা ১ কাপ হলে ঠান্ডা করে ছেঁকে নিয়ে সকাল-সন্ধায় সেব্য।

রোগেরনামঃ মুখগহ্বরের ক্ষত সারাতে
ব্যবহার্য অংশঃ ছাল
মাত্রাঃ ১০ গ্রাম
ব্যবহার পদ্ধতিঃ আধাচূর্ণ করে ৩/৪ কাপ পানিতে জ্বাল করে ছেঁকে নিয়ে ঠান্ডা হলে প্রত্যহ ৩-৪ বার গড়গড়া করতে হবে।

রোগেরনামঃ কৃমির আক্রমনে
ব্যবহার্য অংশঃ বীজচূর্ণ
মাত্রাঃ ১-২ গ্রাম
ব্যবহার পদ্ধতিঃ মধু মিশিয়ে ২ বার আহারের পূর্বে সেব্য। (৫-৭ দিন)

রোগেরনামঃ কুষ্ঠ রোগে
ব্যবহার্য অংশঃ বীজচূর্ণ
মাত্রাঃ পরিমাণমত
ব্যবহার পদ্ধতিঃ বীজ মিহিচূর্ণ করে প্রলেপ আকারে আক্রান্ত স্থানে লাগাতে হয়।

সতর্কতাঃ নির্দিষ্ট মাত্রার অধিক প্রয়োগ করা সমীচীন নয়।

আমাদের এ লেখাটি ভালো লাগলে আরো পড়তে পারেন :

অনন্তমূলের পরিচিতি ও ভেষজ গুণাবলি

কুড়চি
Website |  + posts
Cart
  • No products in the cart.