কাকমাচীর পরিচিতি ও ভেষজ গুণাবলি:
কাকমাচী এক থেকে তিন ফুট পর্যন্ত উচ্চতার এ গাছটি পতিত জায়গায়, রাস্তার পাশে অযত্নেই হয়ে থাকে। পাতা সরল, একান্তর ও কোমল। পাতার বর্ণ কালচে সবুজ। ফল তিত বেগুনের মত, তবে অপেক্ষাকৃত ছোট। ফুল সাদা। কাঁচা ফল সবুজ, পাকলে কাল বা হলুদাভ হয়। স্বাদে কাঁচা ফল তিক্ত, পাকা ফল মিষ্ট।
প্রচলিত নামঃ কাকমাচী, ফুটি বেগুন
ইউনানী নামঃ মাকো
আয়ুর্বেদিক নামঃ কাকমাচী
ইংরেজি নামঃ Common Nightshade, Black Nightshade
বৈজ্ঞানিক নামঃ Solanum nigrum Linn.
পরিবারঃ Solanaceae
প্রাপ্তিস্থানঃ বাংলাদেশের সর্বত্র পাওয়া যায়। আদ্র পতিত জমিতে আগাছা হিসেবে জন্মায়।
রোপনের সময় ও পদ্ধতিঃ মাটিতে পড়ে থাকা বীজ থেকে গীষ্ম ও বর্ষায় প্রচুর পরিমানে জন্মে থাকে। বীজ ছিটিয়েও চাষ করা যায়। এপ্রিল-মে মাসে বীজ বুনতে হয়। বোনার ২০-৩০ দিন পর চারা স্থানান্তর করা যায়।
রাসায়নিক উপাদানঃ পাতায় প্রচুর পরিমাণ রাইবোফ্ল্যাভিন, নিকোটিনিক এসিড, সাইট্রিক এসিড, ভিটামিন সি, বিটা-কেরোটিন, প্রোটিন এবং বিভিন্ন স্টেরয়ডীয় গ্লাইকোসাইড বিদ্যমান।
ব্যবহার্য অংশঃ ফল, পাতা, ক্ষেত্র বিশেষে সমগ্র উদ্ভিদ।
গুনাগুনঃ যকৃত প্রদাহ, পাক্সথলীর প্রদাহ ও শোথ রোগে বিশেষ ফলপ্রদ। উষ্ণতা নিবারক, মূত্র কারক, প্রদাহ নাশক, অর্শ, জ্বর ও বমন বিবারক এবং কণ্ঠস্বর পরিষ্কারক।
বিশেষ কার্যকারিতাঃ যকৃত প্রদাহ, পাক্সথলীর প্রদাহ ও শোথ রোগে বিশেষ ফলপ্রদ।
রোগ অনুযায়ী ব্যবহার পদ্ধতিঃ
রোগেরনামঃ যকৃত প্রদাহ, পাক্সথলীর প্রদাহ ও জিহবার প্রদাহে
ব্যবহার্য অংশঃ গোটা গাছের
মাত্রাঃ ৫০-৬০ মিলি
ব্যবহার পদ্ধতিঃ রস জ্বাল দিয়ে সকাল ও সন্ধ্যায় খালি পেটে সেব্য।
রোগেরনামঃ জন্ডিসে বা পাণ্ডু রোগে
ব্যবহার্য অংশঃ পাতার রস
মাত্রাঃ ৬০-৭০ মিলি
ব্যবহার পদ্ধতিঃ প্রত্যহ ২ বার সেব্য।
রোগেরনামঃ শোথে
ব্যবহার্য অংশঃ পাতার রস বা গোটা উদ্ভিদের রস
মাত্রাঃ ৫০-৬০ মিলি
ব্যবহার পদ্ধতিঃ রস গরম করে সকাল-বিকাল সেব্য।
সতর্কতাঃ অধিক সেবন মূত্রথলীর রোগে ক্ষতিকর।
আমাদের এ লেখাটি ভালো লাগলে আরো পড়তে পারেন :