অশোকের পরিচিতি ও ভেষজ গুণাবলি:
অশোক একটি মধ্যম আকৃতির বৃক্ষ। এটি ৮-১০ মিটার উচুঁ হতে দেখা যায়। গাছের ছাল কালচে রঙের হয়। পাতা যৌগিক, প্রতি ডাঁটায় ৩-৭ জোড়া পত্রক থাকে, ১৫-২০ সে.মি. চওড়া হয়ে থাকে। নতুন পাতার রং লালচে তামাটে বর্ণের, পরিণত পাতা সবুজ। ফুলের রং লালচে কমলা বর্ণের।
প্রচলিত নামঃ অশোক
ইউনানী নামঃ অশোকা, শামশাদ (দেশী)
আয়ুর্বেদিক নামঃ অশোক, হেমাপুষ্প, তাম্রপত্রী
ইংরেজি নামঃ Ashoka
বৈজ্ঞানিক নামঃ Saraca indica Linn.
পরিবারঃ Caesalpiniaceae
প্রাপ্তিস্থানঃ বাগানে ও রাস্তার পাশে লাগানো হয়, তবে প্রাকৃতিক অবস্থায় চট্রগ্রাম ও পার্বত্য চট্রগ্রামে পাওয়া যায়। সিলেটের বনাঞ্চলেও জন্মে।
রোপণের সময় ও পদ্ধতিঃ বীজের মাধ্যমে এর বংশ বিস্তার করা হয়। জুন-জুলাই মাসে এই গাছের ফল পাকে। ফল থেকে বীজ সংগ্রহের পর তা রৌদ্রে শুকিয়ে বীজ তলায় বাঁ পলিব্যাগে লাগানো যায়। এর বীজ বেশি দিন সংরক্ষণ করা যায় না। বীজ বপনের পূর্বে ২৪ ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। চার থেকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে বীজের অঙ্কুরোদ্গম হয়। অঙ্কুরিত চারার বয়স ১-২ বৎসর হলে তা রোপন করতে হয়। বর্ষাকাল চারা রোপনের উৎকৃষ্ট সময়।
রাসায়নিক উপাদানঃ ছালে প্রচুর পরিমান ট্যানিন, হিমাটক্সাইলিন ও খনিজদ্রব্য বিদ্যমান। এছাড়াও এতে কিটোস্টেরল এবং স্যাপোনিন বিদ্যমান।
ব্যবহার্য অংশঃ ছাল, বীজ।
গুনাগুনঃ মাসিক স্রাবের গোলযোগ, বাধক বেদনা, প্রদর, আমযুক্ত মল, অনিয়মিত ঋতুস্রাব ও অতিরিক্ত ঋতুস্রাবে উপকারী।
বিশেষ কার্যকারিতাঃ মাসিক স্রাবের গোলযোগ, বাধক বেদনা ও প্রদরে কার্যকরী।
রোগ অনুযায়ী ব্যবহার পদ্ধতিঃ
রোগেরনামঃ মাসিক স্রাবের গোলযোগ,
ব্যবহার্য অংশঃ ছাল,
মাত্রাঃ চূর্ণ ১০-২০ গ্রাম,
ব্যবহার পদ্ধতিঃ আধাচূর্ণ করে ২ কাপ পানিতে জ্বাল করে ১ কাপ থাকতে নামিয়ে ছেঁকে নিয়ে প্রত্যহ ২ বার সেব্য। (১-২ মাস)
রোগেরনামঃ শ্বেত প্রদরে (লিউকোরিয়া),
ব্যবহার্য অংশঃ কাঁচা বা শুষ্ক ছাল,
মাত্রাঃ কাঁচা ২০-২৫ গ্রাম, শুস্ক ১২ গ্রাম
ব্যবহার পদ্ধতিঃ আধাচুর্ণ করে ২ কাপ পানিতে জ্বাল করে ১ কাপ থাকতে নামিয়ে ছেঁকে নিয়ে প্রত্যহ ২ বার সেব্য। (১-২ মাস)
রোগেরনামঃ আমযুক্ত মলে,
ব্যবহার্য অংশঃ বীজ চূর্ণ,
মাত্রাঃ ১-২ গ্রাম
ব্যবহার পদ্ধতিঃ সকাল সন্ধ্যায় কুসুম গরম পানিতে সেব্য।